ফরহাদ হাসান: গল্প সংক্ষপে,গেন্দু মাঝি বৈঠা হাতে যুদ্ধ করেছিলেন কিশোরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রাতের অন্ধকারে নৌকা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পানিপথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই ছিল তার প্রধান দায়িত্ব। তবে বন্দুক চালানোর ট্রেনিং এবং সুযোগও সে পেয়েছিল কয়েকবার।
যুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন দেশে খেয়া পারাপারের কাজই হয়ে যায় তার জীবন ধারনের একমাত্র উপায়। কিন্তু যে নদীতে সে খেয়া পারাপারের কাজ করতো সে নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ হলে সে যেমন খুশী হয় একই সাথে তার উর্পাজনের চেনা পথটিও হারায়।
মাতৃহীন দুটি মেয়েকে নিয়ে সে পড়ে যায় অকুল পাথারে। ভিটেবাড়ি ছাড়া নিজের চাষযোগ্য কোনো জমি না থাকায় সে নতুন কাজের সন্ধানে বেরোয়। তাকে কাজ খুঁজে দিতে সাহায্য করে তার ভাতিজা রিকশা চালক মানিক। কিন্তু গেন্দু মাঝি যেখানেই যায় দেখে- সবকিছুই যেন ৭১ এর চেনা অপরাধী অথবা, তাদেরই উত্তরাধিকারদের দখলে। সে বারবার ফিরে আসে।
তার গাঁয়েরই এক চেনা প্রভাবশালী যুদ্ধাপরাধী তার কষ্ট নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করে আর প্রতিনিয়ত অপমানকর কাজের প্রস্তাব দিয়ে যায়। আসন্ন ক্ষুধার কস্টের সম্ভাবনা দেখে তার বড় মেয়েটি বাবার কাঁধের বোঝা কমাতে রাতের আঁধারে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। একই রাতে ছোটো মেয়েটি শহরে পালিয়ে যায় গাঁয়ের এক টাউট যুবকের হাত ধরে। গেন্দু মাঝি তবু একা একাই এগিয়ে চলে। কারো সাথে আপোষ করতে পারেনা।
একদিন নদীর ঘাটে বিষন্ন অবস্থায় বসে থাকলে সেই চেনা অপরাধী আবার এসে তাকে ব্যঙ্গ করে। গেন্দু মাঝি তখন নিজেকে আর সামলাতে পারেনা। সেই যুদ্ধাপরাধীকে আরেকবার প্রতিরোধ করে সেই বৈঠা হাতেই। আর সেই প্রতিবাদে যোগ দেয় তার ভাতিজা এই প্রজন্মের মানিক। মানিক বিশ্বাস করে, শুধু শহরের যুদ্ধাপরাধীরা নয় গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা যুদ্ধাপরাধীদেরও একদিন বিচার হবে।
নাটকটির কাহিনি প্রসুন রহমান, পরিচালনা করেছেন রেজাউল হক রাজা রাজ ও সাহাদাত সাহদে, নাটকটির গেন্দু মাঝির চরিত্রে অভিনয় করেছেন সেরা নাট্রকার অভিনেতা মামুনুর রশিদ, অন্যান্য চরিত্রে সালাম খাঁন তরুন, শতাব্দী ওয়াদুদ প্রমুখ। বিজয়ের মাসে একটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটকটি শুক্রবার সন্ধা সাড়ে পাচাটয় চ্যানেল আই এ প্রচারিত হয়েছে।
Leave a Reply