এশিয়ানবার্তা: ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের নৃশংসতার শিকার খাদিজা আক্তার নার্গিসের জ্ঞান ফেরেনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন খাদিজার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানা যাবে আজ শুক্রবার বিকালে। খাদিজার মস্তিস্কে অস্ত্রোপচারের পর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার পর তার অবস্থা জানা যাবে। সেটি সময়সীমা বিকালে শেষ হচ্ছে।
অবশ্য শুক্রবার সকাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা খাদিজার অবস্থা অপরিবর্তনীয়। কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে বেঁচে থাকা খাদিজার শারীরিক অবস্থার অবনতি না হলেও তেমন কোনো উন্নতি নেই। খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস জানান, চিকিৎসকদের বেঁধে দেয়া সময় পার হবার পর বিকালে খাদিজার অবস্থা জানা যাবে।
স্কয়ার হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের পরিচালক ডা. মীর্জা নাজিম উদ্দিন জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা খাদিজাকে বাঁচিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে লাইফ সাপোর্টে থাকা খাদিজার শারীরিক অবস্থার অবনতি বা উন্নতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে শনিবার পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে আজও উত্তাল সিলেট। শুক্রবার সকালে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে। জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা-আম্বরখানা সড়ক অবরোধ করে। শিক্ষার্থীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘খাদিজার ওপর আক্রমণ, জবাব চাই প্রশাসন’, ‘নারী নির্যাতন যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’ ইত্যাদি।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ করেছেন মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা। সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট শিরিন আক্তার বলেন, বর্বরোচিত পাশবিক এই ঘটনার দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। খাদিজার ওপর হামলার ঘটনাস্থল এমসি কলেজ ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ হয়েছে খাদিজার গ্রাম সদর উপজেলার মোগলগাঁওয়ের আউশাতেও। গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হামলাকারী বদরুলের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকালে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসের ওপর হামলা চালায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শেষবর্ষের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম।
এ সময় সে চাপাতি দিয়ে খাদিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপাতে থাকে। এতে খাদিজা মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাত পান। পরে খাদিজার সহপাঠী ও স্থানীয়রা ধাওয়া করে বদরুলকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।
একই সঙ্গে স্থানীয়রা খাদিজাকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে সেলাই দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার ভোরে খাদিজাকে রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আরেক দফা তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
Leave a Reply