সিরাজগঞ্জ থেকে এইচ এম মোকাদ্দেস: সিরাজঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে স্থান পেতে ইতিমধ্যে বিএনপি নেতারা কেন্দ্রে লবিংগ্রুপিং শুরু করেছেন । আগামী এক মাসের মধ্যে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে বলে দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে।তবে মাঠ পর্যায়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবী দলের ত্যাগী ও নির্যাতিতদের সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে যেন স্থান দেয়া হয়।
আর সুবিধাবাদী ও আন্দোলন সংগ্রামে নিরব ভূমিকা পালনকারী নিস্ক্রিয় নেতারা যেন পদ পদবী দখল করতে না পারে সেদিকেও তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট জোড় দাবী জানান। দলের ত্যাগী ও নির্যাতিতদের আশঙ্কা সুবিধাবাদীরা যেন সিলেকশনের মাধ্যমে দলে কোন পদ না পায়। সেদিকেও তারা দৃষ্টি রাখছেন। তবে অধিকাংশ নেতাকর্মী জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদকে স্বপদে বহাল রেখে কমিটি গঠন করার জন্য দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবগত করেছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, যে কোনো সময় কেন্দ্রে থেকে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। জেলা কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্য বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা কেন্দ্রে লবিং শুরু করেছেন। পদ প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যে দলের চেয়ারপারসনের সাথে একাধিকবার সাক্ষাৎ করে তার দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করছেন। পদ প্রত্যাশী অধিকাংশ সাবেক ছাত্র নেতা ইতিমধ্যে তাদের রাজনৈতিক অবদানের কথা উল্লেখ্য করে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বায়োডাটা জমা দিয়েছেন।
এবারে জেলা বিএনপির কমিটি তারুণ্য নির্ভর ও ত্যাগীদের মূল্যায়িত কমিটি হবে বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রত্যাশা করছেন। পদ প্রত্যাশী একাধিক নেতা চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে স্বাক্ষাত করে তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। বিএনপির গঠনতন্ত্রে এক নেতা এক পদ সংযুক্ত হওয়ায় গত ১৭ আগস্ট জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করায় তার স্ত্রী সাবেক এমপি জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রুমানা মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।পরবর্তীতে জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী পরিষদের এক সভায় তাকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসে।
বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রুমানা মাহমুদের ভূমিকায় সন্তুষ্ট দলের নেতাকর্মীরা। আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর নেয়া, আটক নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা দেয়া এবং জামিনে মুক্ত করে আনায় দলে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি দলের দুঃসময়ে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন। আসন্ন জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। তবে এদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.মোকাদ্দেস আলী,সাবেক ছাত্রনেতা সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের দুই-দুইবার জিএস সাইদুর রহমান বাচ্চু, বর্তমান জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান দুলাল।
এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক তুখর ছাত্রনেতা ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জন, জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নুর কায়েম সবুজ, জেলা যুবদলের সভাপতি আবু সাঈদ সুইটের নাম শোনা যাচ্ছে। এবিষয়ে, জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন রাজেশ বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা উচিত। তাহলে ত্যাগী নির্যাতিত নেতাকর্মীরা দলে জায়গা পাবে। এতে দল আরো শক্তিশালী হবে। যারা বিগত আন্দোল সংগ্রামে মাঠে ছিলো না তারা যেন দলে কোন পদপদবী না পায় । জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু বলেন, আন্দোলনে ছিল না এমন নেতারা কমিটিতে ঢোকার চেষ্টা করছে। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নির্যাতিতরা দলে পদ না পেলে আগামীতে আন্দোলন ব্যর্থ হবে। তাই সম্মেলনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা জরুরি। জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক হারুন অর রশিদ খান হাসান বলেন, দলের মধ্যে পদের প্রতিযোগীতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বিগত আন্দোলনে যারা সরকার দলীয়দের সাথে আতাত করে চলেছে তারা যেন কোনভাবেই পদ পদবী না পায়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবী বিগত ১০ বছরে যারা দলের দুর্দিনে মাঠে থেকে আন্দোলন সংগ্রামসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেছে এমন নেতারা যেন দলে ঠাঁই পায়। তৃনমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে সম্মেলনের মাধ্যমে যেন নেতা নির্বাচন করা হয় এমনটাই প্রত্যাশা করছেন জেলা বিএনপির তৃনমূলের নেতাকর্মীরা।
Leave a Reply