রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় পরিবারের লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করলো যুবলীগ নেতা। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাহেরপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নুরপুর মহল্লা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া অপ্রাপ্ত বয়সের ওই স্কুলছাত্রীকে স্থানীয় মেয়র আবুল কালাম আজাদের বাসায় নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয়া হয়।
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে মেয়রের বাসায় নিয়ে যায় যুবলীগের নেতারা। অপহরণের শিকার ওই স্কুলছাত্রী এবার এসএসসির পরীক্ষার্থী ও জামগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার বর্তমান বয়স ১৫ বছর বলে জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা। তবে তুলে যাওয়া হলেও সেখানে পুলিশ পৌঁছার আগেই তার পরিবারের সদস্যদের সম্মিতিতেই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন বাগমারা থানার ওসি সেলিম হোসেন।
ওসি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান চালায়। এসময় মেয়র আবুল কালাম আজাদ তাদের জানায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে রেখেছেন। পরে পুলিশ গিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়। তবে তার আগেই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা বিয়েটি মেনে নেয় এবং তারা কোন অভিযোগ করেনি। তাই মেয়রের উপস্থিতিতে মেয়েকে তার স্বামী সোহেল ও তার পরিবারের সদস্যদের হাতে দেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি।
অপহরণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানান, তাহেরপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্প্রতি ওই স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। শুক্রবার বিকেলে বিয়ের বয়স হয়নি বলে তার পরিবারের সদস্যরা বিয়ে দেয়া হবে না বলে সোহেলকে জানিয়ে দেয়া হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে সোহেল রানা ও তার রাজনৈতিক সহকর্মী ওই ওয়ার্ডের সাধারণ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে ছয়টি মোটরসাইকেল তার বাড়িতে ১২ থেকে ১৫ জন যুবলীগের নেতাকর্মী গিয়ে হামলা চালায়।
এসময় তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির ছুড়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে পরিবারের সদস্যদের মারপিট করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্কুল পড়–য়া বোনকে তুলে নিয়ে যায় মেয়রের বাড়িতে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তাদের বিয়ে দেয় মেয়র নিজে। তার বাড়িতে কাজি আব্দুল মালেককে আগে থেকেই নিয়ে গিয়ে রাখা ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারের এক সদস্য জানান, এ ঘটনার পর তারা যেন থানায় যেতে না পারে সে জন্য বাড়ির চার পাশের যুবলীগের কর্মীরা পাহারা দেয়। তবে পুলিশ যাওয়ার পর লোক পাঠিয়ে তাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় মেয়রের বাড়িতে। তার আগেই পুলিশের কাছে কোন ধরণের অভিযোগ করলে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ফলে বাধ্য হয়ে তারা পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করতে রাজি হননি বলেন ওই মেয়ের বড় ভাই।
Leave a Reply