1. aknannu1964@gmail.com : AK Nannu : AK Nannu
  2. admin@asianbarta24.com : arifulweb :
  3. angelhome191@gmail.com : Mahbubul Mannan : Mahbubul Mannan
  4. info@asianbarta24.com : Dev Team : Dev Team
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পদ্ম পুকুরে শহীদদের বদ্ধভূমি ফলক উন্মোচন ঠাকুরগাঁওয়ে রমজান উপলক্ষে আব্রুয়ান  ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কৃষকের স্বস্তি: বোরো ক্ষেতে পানি জমেছে শারজায় বাংলাদেশী সুপার মার্কেটের উদ্বোধন বড়াইগ্রামে কাটার আগেই পুড়ে ছাই হলো ৩৬ বিঘা পাকা গম চীন ইউক্রেন যুদ্ধকে তার হুমকির বিষয়ে বিশ্বকে সতর্ক করতে কাজে লাগাচ্ছে রাজশাহীর পুঠিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষক নিহত বগুড়ায় ওজনে কম দেয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানের জরিমানা রাজধানীতে মহিলা ছিনতাইকারী চক্রের ৪ সদস্য’কে গ্রেফতার করলো মিরপুর থানা পুলিশ সোসাইটি ফর রিলিফ সংস্থার উদ্যোগে শালিখা মাদ্রাসায় খাদ্য সামগ্রী বিতরন 

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ভূমি দস্যুদের চিত্র

  • আপডেট করা হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২৪ বার দেখা হয়েছে

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো :

বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে আনোয়ারা উপজেলা বাড়ছে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড। গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক স্থাপনা, ভারী শিল্পকারখানা।

সেই সূত্রে আনোয়ারার জমির দাম ও চাহিদা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আনোয়ারায় জমি দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে প্রভাবশালী কয়েকটি চক্র। এসব চক্রে আছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিসহ অনেকেই। খাস জমি থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জমি এমনকি সমুদ্র সৈকতও রক্ষা পাচ্ছে না দখলদারদের হাত থেকে।

বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমির দিকেই দখলদারদের নজর বেশি। দখল করা জমিতে গড়ে উঠছে বিনোদন পার্ক, মাছের ঘেরসহ আবাসিক ও বাণিজ্যিক বহু স্থাপনা। সবার চোখের সামনেই চলছে দখলদারের দৌরাত্ম্য, অথচ প্রশাসনিক পর্যায়ে তা ঠেকানোর কোনো তৎপরতা নেই। সরকারি পর্যায়ে বাধা না পেয়ে দখলদারেরা হয়ে উঠছেন আরও বেপরোয়া। দখল করা জমি বেশি দামে বিক্রির পাঁয়তারা চালাচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ দখল করেই ক্ষান্ত হননি দখলি জমির মাটি কেটে বিক্রিও করছেন। আবার কর্তৃত্ব পোক্ত করতে প্রাচির দিয়ে সমুদ্র সৈকত ঘিরে ফেলেছেন অনেক দখলদার। অনুসন্ধানে যে চিত্র উঠে এসেছে, তা দেখে মনে হয় আনোয়ারা ঘিরে যেন দখলের উৎসব চলছে।

বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে কয়েকজন দখলের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, কোথায় দখল হচ্ছে সেই তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে দিন। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে দখলদারদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দখলে দৌরাত্ম্য যাদের —

আনোয়ারা প্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেল থেকে বেরিয়ে মূল সড়কে ওঠার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ৭০০ মিটার দীর্ঘ একটি ফ্লাইওভার। এই ফ্লাইওভারের নিচের জমি দখল করে সাইনবোর্ড টানিয়েছেন আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক। ফ্লাইওভারের নিচে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমিও মাটি কেটে দখলে নিয়েছেন। জমিতে টানানো সাইনবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বায়না সূত্রে আনোয়ার এখানকার ১২৩ শতক জমির মালিক। অথচ দখল করা জমিসহ পুরো এলাকায় তিনি এখন ঘেরাবেড়া নির্মাণ করছেন। দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন অবলীলায় তা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে জমি ক্রয় করেছি। এর পাশে মাত্র ১০ গণ্ডার মতো জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। এখানে অনেকেই জমি দখল করেছেন। সরকার যখন অন্য দখলদারদের উচ্ছেদ করবে, তখন আমিও দখল ছেড়ে দেব। পুলিশ ফাঁড়ির জায়গা দখলের পরও প্রশাসন কেন নির্বিকার- এ প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব মেলেনি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ফাঁড়ির কাছে জমি দখলের পর আনোয়ার-কে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হলে তিনি সীমানা কিছুটা সরিয়ে নেন। এই কর্মকর্তা আরও জানান, ওই জমির মালিক পাউবো। তারা আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুলিশের এ ব্যাপারে কিছু করার নেই। কর্মকর্তাদের নীরব ভূমিকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমির ব্যাপারে দখলদারদের আগ্রহের অন্ত নেই। বঙ্গোপসাগরের তীরে পারকি সমুদ্র সৈকতের কাছে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছে পাউবো। বাঁধের মুখে মাটি কেটে আলাদা বাঁধ বানিয়ে মাছের খামার বানিয়েছেন সিপিডিএল নামে চট্টগ্রামের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন। এর আগে সেখানে কিছু জায়গাও কিনেছেন তিনি। এরপর মাছের ঘের বানানোর নাম করে সাগর তীরের জমি দখলে নিয়ে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন তিনি। ইফতেখারের মাছের খামারের উত্তর পাশে আরেকটি বাঁধ বানিয়েছেন জাইম আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। এই বাঁধ নির্মাণের জন্য বঙ্গোপসাগর থেকে মাটি ও সৈকত থেকে বালু উত্তোলন করেছেন তিনি। বালু উত্তোলন করায় কিছুদিন আগেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাইম আহমেদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। সাগরের তীর দখলের বিষয়ে জানতে ইফতেখার হোসেনের মোবাইল ফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে বারবার কল ও বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। জাইম আহমেদ বিদেশে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার জমি চাষাবাদ করেন স্থানীয় চাষি নুরুল আনোয়ার। তিনি বলেন, এখানে জাইম আহমেদের জমি ছিল ৪০ কানি। সাগরে বিলীন হওয়ার পর অবশিষ্ট আছে আনুমানিক ১৩ কানি।

সৈকত থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল বলেন, তিনি জানতেন, সাগরের দিকে অনেক দূর পর্যন্ত জাইম আহমেদের মালিকানাভুক্ত জমি রয়েছে। সাগর থেকে বালু তোলা যায় না এটা তার জানা ছিল না। গত কয়েক দিন আনোয়ারা উপজেলায় সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানেলের মুখ থেকে পারকি সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত অন্তত তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দখলের উৎসব চলছে। খাস জমি থেকে শুরু করে সাগরের বাঁধের জমিও দখলদারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ফুলতলী, রাঙ্গাদিয়া, মাঝের চর ও পশ্চিম তুলাতলী মৌজার অন্তত দুই হাজার একর খাস জমি দখলে চলছে নানা পাঁয়তারা। শুধু জমি দখল নয়, জমি থেকে মাটি কেটেও বিক্রি করছেন অনেকে। জাইম আহমেদের জমির পাশেই লুসাই পার্ক নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এ পার্ক নির্মাণ করছেন আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ুম শাহ। তার পার্কের ভেতরেও রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি। বিষয়টি অস্বীকার করেননি কাইয়ুম নিজেও। তিনি বলেন, ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি কমবেশি অনেকেই দখল করেছেন। সেই হিসেবে লুসাই পার্কের ভেতরেও কিছু জমি আছে। লুসাই পার্কের অদূরে টানেলের সার্ভিস এরিয়ার পাশে ৮৬ গণ্ডা জমি কিনেছেন আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ আবদুল মালেক ও সদস্য মোজাম্মেলসহ কয়েকজন। তাদের সঙ্গে যুক্ত আছে পুলিশের একজন সদস্যও। এখানে কাইয়ুম শাহেরও কিছু জমি রয়েছে। এই চক্রটি কেনা জমির পাশের আরও কয়েক কানি দখল করে বাঁধ নির্মাণ করছেন। এরপর সাগর থেকে বালু তুলে সেই জায়গা ভরাটের চিন্তাও রয়েছে তাদের।

বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন

এরকম আরও বার্তা
স্বত্ব © ২০১৫-২০২২ এশিয়ান বার্তা  

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft