ডেস্ক রিপোর্ট: আসন্ন ২০২৪ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী  ( ৪ডিসেম্বর ) রোববার পলোগ্রাউন্ডের মাঠে প্রথম জনসভা করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ।

সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য চট্টগ্রামবাসীর কাছে ভোট চাইবেন।

দলীয় নেতাকর্মীদের দিবেন গাইডলাইন।চট্টগ্রামবাসী জন্য নানান উন্নয়নযজ্ঞের ঘোষণা আসতে পারে।শেষবার তিনি ২০১২ সালের ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন তখন তিনি।

তবে দীর্ঘদিন পরে প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে চট্টগ্রামের মানুষ নানান দাবির কাঙ্কিত বাস্তবায়নের ঘোষনার দিকে মুখিয়ে আছেন, তারমধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মূলত ঘোষনা আর নানাবিধ জটিলতায় আটকে থাকা কালুরঘাট সেতু নির্মানের বাস্তবিক ঘোষণা। কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণের দাবি সারা চট্টগ্রামের মূখ্য দাবি হিসেবে রুপ নিয়েছে।সেতু নির্মাণের দাবীতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বোয়ালখালীসহ সমগ্র মানুষ। এই একটি সেতুর জন্য প্রতিদিন দক্ষিণ চট্টগ্রামের অধিকাংশ মানুষের নানাবিধ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যুগ যুগ ধরে।

তাই চট্টগ্রামের আপামর জনসাধারণ চট্টগ্রামের জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মানের সুনির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক ঘোষনা চান।চট্টগ্রামকে কার্যতঃ বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে কাগজে-কলমে ঘোষণাও চান চট্টগ্রামবাসী।ঢাকার আদলে মেট্রোরেলের চালুরও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা চায় তারা ।

সরকারী স্কুল,কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা বাড়ানোসহ সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি খেলার মানোন্নয়ন ও শিশু-কিশোরদের নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে না জড়াতে এলাকায় এলাকায় খেলার মাঠ নির্মান করে দেওয়ার দাবীসহ এই অঞ্চলের নানান সমস্যা ও দাবীসমূহ ভেদাভেদ ভুলে আওয়ামী লীগ নেতাদের তুলে ধরার আহবান জানান চট্টলার সাধারণ মানুষ।

১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপি বিভাগীয় গণসমাবেশ করার ৫৩ দিনের মাথায় জনসভা করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।জনসভাকে রেকর্ড পরিমাণ লোক সমাগম করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে দিনরাত কাজ করছে নগর-দক্ষিন-উত্তর আওয়ামীলীগ ও অঙ্গনংগঠনের নেতাকর্মীরা ।সমগ্র চট্টগ্রামসহ নগরী যেন ব্যানার – পোষ্টারের নগরীতে পরিণত হয়েছে।মোড়ে মোড়ে চলছে প্রায় একমাস ধরে চলছে মাইকিং।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চট্টগ্রামের উন্নয়নে আওয়ামীলীগ সরকার বাস্তবায়ন করেছে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প।তারমধ্যে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মান ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর বঙ্গবন্ধু টানেল ও ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজও প্রায় শেষের পথে।নগরীতে নির্মিত হয়েছে প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি উড়ালসড়ক যার সুফল পাচ্ছে নগরবাসী, শাহ আমানত সেতুর পশ্চিম অংশ থেকে কর্ণফুলী পাড়ঘেঁষে ফিরিঙ্গিবাজার হয়ে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে আরেকটি ফ্লাইওভার।

দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে শহরমুখী মানুষের চাপ কমাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মেরিন ড্রাইভের বিকল্প হিসেবে এ উড়ালসড়কটি করার পরিকল্পনা করছে সরকার। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছে সেনাবাহিনী।বিশেষ করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থপনা ও কর্ণফুলী নদী দখল-দূষণমুক্ত করতেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়নের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গড়ে উঠছে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর যেখানে দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি তাদের কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।সেখানে ৭২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৫০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।এসব প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২০ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার এবং সম্ভাব্য সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে (বিজিএমইএ গার্মেন্ট পার্ক, বেপজা ও এসবিজি ইকোনমিক জোন)। শেষের দিকে বহু আকাঙ্কিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ। মহেশখালীর সমুদ্র অঞ্চলে শুরু হয়েছে বিশাল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের।

আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবী,চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর এত অবদানের প্রতিদান হিসেবে ৪ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশে চট্টগ্রামের আপামর জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে, এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এনে উন্নয়নে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিবেন চট্টগ্রামবাসী।