এম.দুলাল উদ্দিন আহমেদ,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রায় একযুগ ধরে শত-শত শালিক পাখির ভালোবাসায় নিজেকে নিভীরভাবে জড়িয়ে রেখেছেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার হরিণা পিপুলবাড়িয়া বাজারের আব্দুর রশিদ (৫৮)। পেশায় তিনি একজন দোকানদার কিন্তু সবাই চেনেন তাকে ‘পাখিপ্রেমী’ হিসেবে। একযুগ ধরে মায়া-মমতা আর ভালোবাসায় জড়িয়ে থাকা শত-শত শালিক পাখি ক্ষুধা অনুভব করলেই আব্দুর রশিদের দোকানের সামনে এসে জড়ো হয়ে শুরু করে কিচিরমিচির। কিচিরমিচির এর মাধ্যমে জানান দেয় তাদের উপস্থিতি।
এসময় তাদের কিচিরমিচির থামাতে মাটিতে খাবার ছিটিয়ে দেন আব্দুর রশিদ। প্রতিদিন দু’বেলা খাবারের সময় শালিক পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ এসে যেন আনন্দের ঢেউ তোলে পাখিপ্রেমী আব্দুর রশিদের অন্তরে। এভাবেই আজ প্রায় একযুগ ধরে এই শালিক পাখিগুলোর সাথে তার গড়ে উঠেছে গভীর ভালোবাসা। ইসলাম যে শিক্ষাটি দিয়েছে সেই শিক্ষাটি হৃদয়ে ধারণ ও লালন করে আব্দুর রশিদ তার মহত্ত্ব দিয়ে এ কাজটি করায় তিনি এলাকায় প্রশংসিত হয়েছেন।
প্রতিদিন ভোরের সুর্য ওঠার সাথে সাথেই ঝাঁকে ঝাঁকে শালিক পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখড়িত হয়ে ওঠে আব্দুর রশিদের দোকানের আশপাশ। পাখিদের এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন পথচারীসহ আশপাশের দোকানদাররা। শালিক পাখির প্রতি এমন ভালোবাসা প্রদর্শন করায় আব্দুর রশিদ এলাকায় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। পাখিপ্রেমী আব্দুর রশিদ এর বাড়ী সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিউনের কাঁনগাতী গ্রাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,সকালে আব্দুর রশিদ দোকান খোলার আগে সামনের সড়কের পাশে চানাচুর ছিটিয়ে দেন। এতে ঝাঁকে ঝাঁকে শালিক পাখি সড়কে এসে খাবার খায় এবং খাবার গ্রহনকালে আব্দুর রশিদকে ঘিরে ধরে পাখিরা তাদের ভালোবাসা প্রদর্শন করে। এভাবে তারা সকালের খাবার খেয়ে চলে যায় আবার ফিরে আসে দুপুরের খাবার খেতে।
পাখিপ্রেমী আব্দুর রশিদ এশিয়ান বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকম’কে বলেন,এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পাখিগুলোকে দুবেলা খাওয়াতে পেরে আমি আনন্দিত। এজন্য আমার প্রতিদিন ১০০-১২০ টাকা খরচ হয়। তবুও আমি পাখিদের খাওয়ানো বাদ দেইনি। এটা আমৃত্যু অব্যাহত থাকবে। তবে পাখি থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রাণীর প্রতি আব্দুর রশিদের মতো প্রত্যেক মানুষেরই ভালোবাসা থাকা দরকার-এমনটাই প্রত্যাশা সবার।