জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনে চলন্ত ট্রেন সীমান্ত এক্সপ্রেস
থেকে প্ল্যাটফর্মে নামার সময় ট্রেনে নিচে পড়ে মারা গেছে রাহুল ইসলাম (২৩) নামে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী।
রাহুল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্বিবদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সে বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভার কালীপাড়া গ্রামের মৃত শাহরিয়ার রইচ ও রাবেয়া দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিলেন।
রেলওয়ে থানা পুলিশ ও রেল স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, রাহুল খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে চিলাহাটীগামী আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে “চ” বগির টিকিট কেটে ঈশ্বরদী পর্যন্ত আসেন এবং সেখান থেকে “ঞ” বগির টিকিট কাটেন সান্তাহার স্টেশন পর্যন্ত। নামবেন জয়পুরহাটে। এরপর সে ঘুমিয়ে পরে। এরইমধ্যে ট্রেনটি ভোরে জয়পুরহাট স্টেশনে পৌঁছে যায়। কিন্তু রাহুল ঘুমিয়ে থাকার কারণে বুঝতে পারেনি। যখন ট্রেনটি ছেড়ে যাচ্ছিলো সেই মুহুর্তে ঘুম ভেঙে যায়। তরিঘরি করে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে ওই ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই রাহুল মারা যায়।
ট্রেনটি এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম অতিক্রম করার পর তার লাশ দেখতে পায় লোকজন। লাশের সঙ্গে একটি কাপড়ের ব্যাগ ও মুঠোফোন পড়েছিল। ব্যাগে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা রেলস্টেশনে এসে লাশটি রাহুলের বলে শনাক্ত করেন।
সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী মাজেদুর রহমান বলেন, আমি “জ” বগির যাত্রী ছিলাম। ছেলেটি কত নম্বর বগিতে ছিল তা বলতে পারব না। আমিও খুলনা থেকে আসছিলাম, পাঁচবিবিতে আমার বাড়ি। জয়পুরহাট স্টেশন থেকে ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর দেখি লাইনের ওপর একজনের লাশ পড়ে আছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশ ও স্টেশন কর্তৃপক্ষকে জানাই।
রাহুলের চাচাতো ভাই রবিউল ইসলাম রকি বলেন, রাহুলের আর কোনো ভাই-বোন নেই। সে বাবা-মার একমাত্র সন্তান ছিল। তার বাবাও মারা গেছেন। এখন শুধু মা রয়েছে। তিনিও একা হয়ে গেলেন।
রাহুলের বড় চাচা মামুনুর রশিদ বলেন, রাহুল খুলনাতে পড়াশোনা করতো। ওখানে সে ফুফুর বাড়িতে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতো। মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতো। আমরা তাকে একা যেতে দিতাম না। কয়েক মাস আগে সে বলে আমি একা চলাচল করতে পারবো। ছুটিতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হলো না।
সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন বলেন, চলন্ত ট্রেন থেকে দ্রুত প্লাটফর্মে নামতে গিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে রাহুল ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনাস্থলে উপ-পরিদর্শককে পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত জানার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।