বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন জেলা আ’লীগের শীর্ষ নেরতারা। এরই মধ্যে শুক্রবার জেলা ছাত্রলীগের দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ হয়েছে। এসময় দুপক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করলেও কোন অঘটন ঘটেনি।
জানা গেছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শহরের সাতমাথাস্থ মুজিব মঞ্চে ছাত্রলীগের নব গঠিত কমিটিকে নিয়ে সমাবেশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি , সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতারা। অপরদিকে মাত্র ৩০ গজ দুরে আন্দোলরত ছাত্রলীগের একাংশের সভায় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন।
নতুন কমিটির প্রতি সমর্থন জানিয়ে শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছাত্রলীগের কয়েকশত নেতা-কর্মী শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জড়ো হন। পরে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে সাতমাথার মুজিব মঞ্চে জড়ো হন। সেখানে এক সমাবেশের আয়োজন করেন তারা। তবে তারা দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে ঢোকেন নি। সেখানে সহিংসতা এড়াতে পুলিশ আগে থেকেই শক্ত অবস্থানে ছিল।
নতুন কমিটিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু। নব গঠিত ছাত্রলীগের কমিটিকে নিয়ে চলমান গত কয়েকদিনের সংকটের মাথায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের অনুসারী নিয়ে এই প্রথম মাঠে এলেন।
মজনু বলেন, প্রত্যেকেই যোগ্য ও ত্যাগী নেতা। কিন্তু কমিটির নেতৃত্বের পদ দুটি। আপনারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সিভি জমা দিয়েছেন। কেন্দ্র সিভি যাচাই করে যে দুজনকে ভালো মনে করেছেন পদ দিয়েছেন।
আপনারা সবাই ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি সজিব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মাহিদুল ইসলাম জয়কে মেনে নিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। মজনুর প্রতি সমর্থন জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন নবাব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহিন।
এ সমাবেশের পরপরই জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে কয়েকদিন ধরে অবস্থানরত ছাত্রলীগের একংশের নেতারা আরেকটি সমাবেশ করেন। ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা এ সমাবেশের আয়োজন করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুঞ্জুরুল আলম মোহন। তিনি বলেন, এ আন্দোলনের সঙ্গে আমি একাত্মতা ঘোষণা করছি। মোহন আরও বলেন, ‘পার্টি অফিস উন্মুক্ত থাকবে। এখানে সবাই আসবে। শুধু যাদের নামে কমিটি ঘোষণা হয়েছে, তারা আসবে না। সমাবেশে ছাত্রলীগের বিক্ষোভকারী নেতা তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, সিদ্ধার্থ কুমার সাহা, মাহফুজার রহমান, মিথিলেস কুমার প্রসাদ, রাকিবুল হাসান শাওন, নূর মোহাম্মাদ সাগরউপস্থিত ছিলেন।
উল্ল্যেখ , গত সোমবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি করা হয় সজীব সাহাকে। সম্পাদক হন আল-মাহিদুল ইসলাম জয়। এরপর কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে জেলা ছাত্রলীগের ওই নব গঠিত কমিটিতে পদ পাওয়া কয়েকজন নেতা তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর থেকে প্রায় চারদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের নিজ দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। সর্বশেষ দুপক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে বৃহস্পতিবার তালা খুলে দেয়া হলেও নতুন কমিটির নেতা ছাড়া অন্যরা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।