জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জামায়াত-শিবিরের গোপন বৈঠকের খরব পুলিশকে জানিয়ে দেওয়ার সন্দেহে এক কলেজ ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই কলেজ ছাত্রী পাঁচবিবি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের নামা বাঁশখুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার মামলা সূত্র ধরে সরেজমিনে ওই এলাকার গিয়ে জানা যায়, গত ১ নভেম্বর রাতে উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের নামা বাঁশখুর গ্রামের মৃত আব্দুস ছালামের পুত্র সাইদুল ইসলামের বাড়ীতে জামায়াত-শিবিরের একটি গোপন বৈঠক চলছিল। ওই বৈঠকের খবরটি উপজেলা প্রশাসন জানতে পেরে রাতেই পাঁচবিবি থানা পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এসময় পুলিশে উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার জন্য ওই কলেজ ছাত্রীকে দোষারোপ করে একই গ্রামের কুসুম্বা ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা আব্দুল হান্নান ও তার পুত্র ছাত্রশিবির নেতা আহসান হাবিবসহ শিবিরের সহকর্মীদের সাথে নিয়ে তাদের বাড়ী গিয়ে শাসাতে থাকে। বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে ওই কলেজ ছাত্রীটিকে কিলঘুষি, টানাহেঁচড়াসহ শ্লীলতাহানি করে তারা। এসময় পরিবারের লোকজন এবং পাশের বাড়ীর লোকজন এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এ্যালোপাথারী মারপিট করে। শুধু তাই নয় ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করে তার মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়।
এদিকে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে ওই কলেজ ছাত্রীকে শিবির নেতা আহসান হাবিব ও জনৈক অপর এক সাংবাদিক থানা চত্তরেও তাকে হুমকি দিতে থাকলে তা ওই কলেজ ছাত্রী নিজের মোবাইলে ভিডিও ধারন করেন। ওই ভিডিওতেও তাকে লাঞ্চিত করতে দেখা যায়।
নামা বাঁশখুর গ্রামের শাহিন, কমলা দারাজ ও নাজমা বেগম বলেন, ১ নভেম্বর সাইদুলের বাড়ীতে জামায়াত ও শিবিবের বৈঠক চলছিল। সেটি কে বা কারা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। ওই ঘটনায় পুলিকে খবর দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কলেজ ছাত্রীর উপর দোষ চাপিয়ে পরের দিন তাকে শারিরিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি করে।
সাবেক স্থানীয় ইউপি সদস্য দুলাল হোসেন বলেন, ছাত্র শিবির ও জামাতের লোকজন যখন কলেজ ছাত্রীর বাড়ীতে তান্ডব চালায় তখন সে আমাকে ফোন করলে আমি সেখানে উপস্থিত হওয়া মাত্র তারা আমাকেও মারধর ও আমার মোটর সাইকেল ভাংচুর করে।
সাইদুলের বাড়ীতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি, তবে তার পুত্রবধু কুলছুম বেগম বলেন, আমাদের বাড়ীতে কোন জামায়াত শিবিরের মিটিং হয় নি। তবে পুলিশ কেন এসেছিল এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ কেন এসেছিল তা আমি বলতে পারব না।
জামাত নেতা আব্দুল হান্নান ও তার ছেলে শিবির নেতা আহসান হাবিবের বাড়ীতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি। তবে আহসান হাবিব মুঠোফোনে জানান, ঘটনার দিন বিষয়টি মিমাংসার জন্য এলাকাবাসী হিসাবে আমাকে উভয়পক্ষ ডাকে। বৈঠক চলাকালীন জোবাইল নামের এক ছেলের সঙ্গে ওই কলেজ ছাত্রীর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। আমি লোকজনের সহায়তায় সেখান থেকে সড়ে আসি।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওইদিন সেখানে জামায়াতের কোন সাংগাঠনিক বৈঠক বসেনি, তবে শুনেছি উক্ত এলাকার স্থানীয় মসজিদ নিয়ে কয়েকজন আলোচনা করছিল।
পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।