জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে দু’পক্ষের পারিবারিক সমস্যা ও সংকট নিরসনের লক্ষে আয়োজিত উঠোন বৈঠকে আহসান হাবিব নামে স্থানীয় এক সাংবাদিকের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রসহ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে কুসুম্বা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আব্দুল বারিক দুলাল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে । হামলার শিকার ওই সাংবাদিক বর্তমানে দৈনিক দেশের কণ্ঠ পত্রিকায় জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন।
সাংবাদিক আহসান হাবিব বলেন, দু পক্ষের পারিবারিক কোন্দলকে কেন্দ্র করে বাকযুদ্ধের এক পর্যায়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেখানে বিবাদ মিমাংসার জন্য গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ডাকা হয়। আমি একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়াতে আমাকেও ডাকা হয় ওই দরবারে। আলোচনার শেষ পর্যায়ে বৈঠক স্থলের মালিক সাইফুল ইসলাম এবং সাবেক মেম্বার দুলাল ও তার সহপাঠীদের কৌশলে বাড়িতে ডেকে আনেন। ততক্ষণে কিছু লোকজন বৈঠক থেকে উঠে যায়। সে সুযোগে বাড়ির দু’দিকের দরজা তালাবদ্ধ করে সাবেক মেম্বার দুলালের নেতৃত্বে বাড়ির মালিক সাইফুল ইসলাম, তার ছেলে ওমর ফারুক, স্ত্রী কমলা, মেয়ে শাপলা, দারাজ মন্ডল, মাহিনসহ ১০-২৫ জন ব্যক্তি আমাকেসহ প্রতিবেশী জোবায়েরের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা আমাদের এলোপাথাড়ি কিল-ঘুসি মারে ও লাঠি চার্জ করে । পরবর্তীতে আমাদের চিৎকারে গ্রামবাসীরা এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে।
একই গ্রামের বাসিন্দা মাজেদ বলেন, আমিও ওই বৈঠকে উপস্হিত ছিলাম। আলোচনার শেষ পর্যায় কিছু লোক চলে যায়। হঠাৎ সাবেক মেম্বার দুলাল বৈঠকস্থল সাইফুলের বাড়িতে আসেন। তারপরই কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়ির দরজা বন্ধ করে আলোচনা চলাকালিন সময়ে সাইফুলের মেয়ে শাপলা জোবায়েরের গালে থাপ্পর মারতে শুরু করে। সাংবাদিক আহসান হাবিব এর প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে চতুর্দিক থেকে সাংবাদিক আহসান হাবিব ও জোবায়েরের উপরে আক্রমণ শুরু করে তারা।
ফেরদাউস হোসাইন বলেন, আমিও বৈঠকে ছিলাম। ব্যক্তিগত কিছু কাজ থাকায় এক পর্যায়ে বাড়ি ফিরে যাই। কিছুক্ষণ পর চিল্লাচিল্লির আওয়াজ কানে আসে। দ্রুত আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সেখানে অনেক মানুষ, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। ভেতরে মারপিটের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। পরে গ্রামবাসীরা এক হয়ে তাদেরকে উদ্ধার করি।
অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য দুলাল বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা। আমি গিয়েছিলাম ওই বৈঠকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য। আমি কাউকে মারধোর করিনি, উল্টো তারাই আমাকে কিল ঘুষি মেরেছে।
এ বিষয়ে কুসুম্বা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য ফরিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা একটা জঘন্য অপরাধ। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শালিসি বৈঠকে আমারও থাকার কথা ছিলো কিন্তু জরুরি কাজে ঢাকায় থাকায় তা সম্ভব হয়নি। সাবেক মেম্বার একজন সন্ত্রাসী। সে নারী কেলেংকারি, হাইজ্যাক, মাদক, জুয়া, চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। গ্রামের পরিবেশকে সে নানাভাবে নষ্ট করেছে। তার শাস্তি হওয়া উচিত।
পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, আহসান হাবিবের দেওয়া একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।