এম.দুলাল উদ্দিন আহমেদ,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
ভিয়েতনাম পদ্ধতিতে কেঁচো সার ও কেঁচো তৈরীতে সফলতা পেয়েছে সিরাজগঞ্জের টুক্কু মুক্তার নামে এক যুবক। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কড্ডার মোড় সংলগ্ন পোড়াবাড়ী এলাকায় নিজস্ব বাড়িতে ৬ শতক জমিতে ৭টি বেড় তৈরী করে কেঁচো ও কেঁচো সার উৎপাদন করে আসছে। ড্রাগন চাষী,ছাদ বাগানি ও সবজি চাষিরা ও এনজিও কর্মীরা কেঁচো সার ও কেঁচো ক্রয় করে থাকেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, টুক্কু মুক্তা নামে এই যুবক ১ বছর পূর্বে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা হতে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৩টি রিং দিয়ে প্রাথমিকভাবে কেঁচো সার ও কেঁচো উৎপাদন শুরু করেন। পরবর্তী তার সফলতায় ২য় বার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ১০টা রিং সরকারিভাবে বরাদ্দ পেয়ে কেঁচো সার ও কেঁচো উৎপাদন শুরু করেন। কিন্তু টুক্কু মুক্তার কাছে রিং পদ্ধতিতে কেঁচো সার বা কেঁচো উৎপাদন ব্যয়বহুল ও বিরক্তিকর মনে হচ্ছিল। তাই তিনি ইউটিউব ও গুগলে সার্চ করতে থাকেন।
কিভাবে সহজ পদ্ধতিতে কম ব্যয়ে, কম পরিশ্রমে কেঁচো সার কেঁচো উৎপাদন করতে পারেন সে বিষয়ে ইউটিউব ও গুগলে পেয়ে যান। ইউটিউব ও গুগলে সার্চে টুক্কু মুক্তা খুজে পান ভিয়েতনাম পদ্ধতি। ইউটিউব দেখে বাড়িতে ৬ শতক জায়গাতে প্রাথমিকভাবে ১টি বেড় তৈরী করেন।
টুক্কু মুক্তার জানান,মাটির নিচে সাধারণ পলি মুরি দিয়ে ইটের বেড়া গবরের উপরে পাটের রিজেক্ট ছালা দিয়েই বেড় তৈরী করেন। ১টি বেড় তৈরী করতে প্রায় ২ হাজার টাকার মত খরচ হয়। ১টি বেড়ে প্রাথমিক কাঁচামাল হিসেবে পাশের গরুর খামার থেকে থেকে কাঁচা গোবর ১৫’শ কেজি ও ৬ কেজি কেঁচো সংগ্রহ করেন। ৬০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বেড় থেকে ১ হাজার কেজি কেঁচো সার ও ১৮ কেজি কেঁচো পান তিনি। তিনি আরও জানান, ১ম বেড় থেকে অধিক পরিমাণ লাভবান হয়ে পরবর্তীতে আরও ৭টি বেড় তৈরী করি। বর্তমানে ৭টি বেড়ের মধ্যে ৩টি বেড়ের কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রি করেছি। ৪টি বেড়ের কেঁচো সার ও কেঁচো অল্পকিছু দিনের মধ্যে ঘরে তুলব।
বর্তমান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে এই সার সিরাজগঞ্জ সহ পুরো দেশে ব্যাপক চাহিদার কথা জানান আধুনিক এই কেঁচো চাষা।
এদিকে কেঁচো সার ও কেঁচো উৎপাদনে টুক্কু মুক্তার সফলতা দেখে (২৬ অক্টোবর ২০২২ইং) তারিখে বগুড়া অঞ্চল এর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার আজ.জ.ম আহসান শহীদ সরকার, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো: রোস্তম আলী, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্তা উপ সহকারী কৃষি অফিসার এস.এম মেহেদী হাসান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। উপস্থিত কৃষিবিদরা ভিয়েতনাম পদ্ধতিতে কেঁচো সার তৈরি করলে একজন খামারি খুব সহজেই লাভবান হবেন বলেন মন্তব্য করেন এবং সর্বোচ্চ কেঁচো সার ও কেঁচোর উৎপাদন হবে বলে প্রত্যাশা করেন।