1. aknannu1964@gmail.com : AK Nannu : AK Nannu
  2. admin@asianbarta24.com : arifulweb :
  3. angelhome191@gmail.com : Mahbubul Mannan : Mahbubul Mannan
  4. info@asianbarta24.com : Dev Team : Dev Team
রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন

মফস্সল এলাকাতেও নিত্যপণ্যের দামে জেরবার নিম্নবিত্তরাই নয় কুলিয়ে উঠছে না মধ্যবিত্তরাও!

  • আপডেট করা হয়েছে : সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২
  • ২১ বার দেখা হয়েছে

মঈন উদ্দীন, রাজশাহী: ক্রমাগত বাড়তে থাকা নিত্যপণ্যের দামে জেরবার নগরীর পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জের মানুষ। নিত্যপণ্যের সঙ্গে বাড়ছে অন্যান্য সেবাপণ্যের দামও। এই অবস্থায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে সন্তানদের প্রাইভেট, শিক্ষা উপকরণসহ চিকিৎসার খরচ। কমিয়ে দিচ্ছে চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়ও। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা ছোট করছে মানুষ। এরপরও মাসিক ব্যায় নিয়ে টিকে থাকা সম্ভব হয়ে আর আসছে না। কারণ ব্যয়ের লাগাম টানা যাচ্ছে না কিছুতেই। প্রতিদিনই বাড়ছে কোনো না কোনো খরচ। ব্যয় কমিয়েও পেরে উঠছে না মানুষ কিছুদিন পর পর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে ভোক্তার নাভিশ্বাস চরমে উঠেছে। তাই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষ। কেবল নিম্নবিত্তরাই নয়, কুলিয়ে উঠতে পারছে না মধ্যবিত্তরাও।

স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনার পর রাজশাহীর পবা উপজেলায় বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) চাকরি করেন মুরাদ। কিন্তু স্বল্প বেতনে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তাল মেলাতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, যে বেতন পাই তাতে বছর খানেক আগে দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ ৪ জনের সংসার মোটামুটি চালানো যেত কিন্তু এখন খুবই কষ্টকর। তিনি বলেন, বড় সন্তান একটি স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পরাশুনা করে। সংসার চালানো কঠি হয়ে পরায় তার প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
রাজশাহী নগরীর ছোট বনগ্রাম এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন শামসুল হক তিনি বলেন, দুই সন্তানের পড়াশোনা, নিজের চিকিৎসা, অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে অতিকষ্টে জীবন চলছে আমার। পরিবারের খরচ মেটাতে একটি এনজিও থেকে ঋণ করেছি। কারও কাছে মুখ ফুটে অভাবের কথা বলতেও পারি না, সইতেও পারি না।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবী দিনাজপুরের আজহার আলী বিয়ে করেছেন ২০২০ সালের জুন মাসে স্ত্রীকে নিয়ে কাশিয়াডাঙ্গায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দিন যত গড়াচ্ছে জীবনমান ততই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে তার। তিনি বেতন পান ১৭ হাজার টাকা। সংসার দু’জনের হলেও এই আয়ে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। টিকে থাকতে প্রতিনিয়তই সংসারের খরচে কাটছাঁট করতে হচ্ছে। তিনি বিয়ের পর এক রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন। প্রতিমাসেই সাড়ে ৩ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দিতে হয়। বিদ্যুতের বাবদ দিতে হয় ৫০০ টাকা। চাল, ডাল, তেলসহ একান্তই নিত্যপ্রয়োজীয় দ্রব্য ক্রয় করতে মাসে সর্বনিম্ন কয়েক মাস আগেও সাড়ে ৬হাজার টাকা খরচ হতো বর্তমানে সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। অর্থাৎ বর্তমানে প্রতিমাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা বাধ্যতা মূলক খরচ করতে হয়। বেতনের বাকি থাকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।

অফিসে যাতায়াত বাবদ আড়াই হাজার টাকা খরচ। এ ছাড়া আনুষঙ্গিক খরচ রয়েছে আরও ২ হাজার টাকা। মাসে করতে পারেনা কোন সঞ্চয় রয়েছে। মাস শেষে বেতন পাওয়ার পর আয়-ব্যয় মেলাতে পারেন না আজহার। আজহার বলেন, দ্রব্যমূল্যর এ উর্দ্ধগতিতে জীবনযাপনের ধরন বদলাতে হচ্ছে। তিনি জানান, আগে প্রতিমাসেই বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যেতেন। বিয়ের পর গত কয়েক মাসের মাধ্যে স্ত্রীকে নিয়ে মাত্র একবার গিয়েছিলাম শশুর বাড়িতে। আগে তার খাবার তালিকায় অধিকাংশ সময়ই মাংস থাকতো। কিন্তু এখন তা মোটেই হয়ে উঠেনা। মাছ কেনাও কমিয়েছেন। কমদামি সবজি আর শাক খাবার তালিকায় যোগ হয়েছে। মাঝেমধ্যে ডিম কিনেন। এতে খরচ কিছুটা কমলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
স্ত্রী ও সন্তান আর মা-বাবাকে নিয়ে রাজশাহীর নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন রংপুরের মাইনুল ইসলাম। তিনি বিসিক এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। আগামী নভেম্বর মাসে তিনি গ্রামে চলে যাবেন বলে পরিবারের সকলকে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

মাইনুল বলেন, বর্তমানে সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় সংসারের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। বাসা ভাড়ার পাশাপাশি যাতায়াত ভাড়াও বেড়েছে। নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে পোষাতে না পেরে বাধ্য হয়ে গ্রামে চলে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ যে কোনো রাষ্ট্রের সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সার্বিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য আমদানির পাশাপাশি রপ্তানির ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। এতে শুধু ভোক্তা বাজার নয়, আর্থিক বাজারেও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হবে। শুধু বিভাগীয় শহর বা জেলা পর্যায়ে নয়, উপজেলা ও ক্ষুদ্র বাজারগুলোও মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে হবে। শুধু ব্যবসায়ীদের সতর্ক করলেই চলবে না, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। ভোক্তাকে বাজারমূল্য বা পণ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। সরকার যদি ব্যবসায়ীদের কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষ নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করতে পারবে।

বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন

এরকম আরও বার্তা
স্বত্ব © ২০১৫-২০২২ এশিয়ান বার্তা  

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft