জয়পুরহাট প্রতিনিধি: ধুলো- ময়লার আস্তরণে ঢাকা টাইলস করা বেসিন। সাবান রাখার কেস আছে। সাবান নেই। সেটিও ময়লায় ভরা। ট্যাপ থেকে পানি পড়ার স্থানেও রয়েছে অসংখ্য ধুলো-বালি।
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে এমনই চিত্র চোখে পড়লো জয়পুরহাট শহরের বাসটার্মিনাল এলাকায়।
এই চিত্র শুধু বাস টার্মিনালেরই নয়, করোনার প্রাদুর্ভাবকালীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মিত
জেলায় ৩৩টি বেসিনের প্রায় সবগুলোর অবস্থা একইরকম। এছাড়া জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের বেসিনটিরও অবস্থাও বাস টার্মিনাল বেসিনের অনুরূপ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আক্কেলপুর উপজেলার সাব রেজিস্টার অফিসের বেসিনটি ময়লা আর গাছের পাতায় ভরে গেছে। কাঁচাবাজার এলাকার বেসিন যেন এক ধরনের ডাস্টবিন, ভালো নেই আক্কেলপুর থানার বেসিনটিও। পাশাপাশি ক্ষেতলাল, সদর, পাঁচবিবি উপজেলাসহ জেলার ৩৩ বেসিনের হাতে গোনা কয়েকটি বেসিন ছাড়া প্রায় সবগুলোর অবস্থা একেবারে বেহাল।
আক্কেলপুরের কাঁচাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী টিটু ইসলাম বলেন, বেসিনে পানি কীভাবে আসবে সেটারই ব্যবস্থা নেই। হাত ধোয়া তো দূরের কথা। বেসিনের ভেতরে ও চারপাশেই ময়লা। বাইরে আবার ময়লার ভ্যান।
বাস টার্মিনাল এলাকার চা দোকানি রবিউল বলেন, এখন বাস ধোয়ার জন্য মাঝে মাঝে ওই বেসিন ব্যবহার হয়। বেসিনের ভেতরে বালতি রেখে সরাসরি পাইপ থেকে পানি নেওয়ায় ট্যাপ ভেঙে গেছে। এটি কোনো মানুষই এখন ব্যবহার করে না।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমে বেসিনটি ব্যবহার হতো, কিন্তু এখন হয় না। সেখানে বালতি রেখে কেন পানি নেবে। বাস ধোয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা তো রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জয়পুরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের পাঁচ উপজেলায় ৩৩টি বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি বেসিন বিএমডব্লিউএসএসটি প্রকল্পের আওতায়। জয়পুরহাট সদরে ১৫টি, পাঁচবিবিতে ৬টি, আক্কেলপুর উপজেলায় ৬টি, ক্ষেতলালে ৩ কালাই উপজেলায় ৩টি। এসব বেসিন বাস্তবায়নে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। আর বাস্তবায়নের পর সেসব বেসিন ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে হস্তান্তর করে দেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘হাতের পরিচ্ছন্নতায় এসো সবে এক হই’। হাত ধোয়াকে জীবনযাপনের অংশ করে নেওয়া অর্থাৎ অভ্যস্ত করানোর লক্ষ্যে পালিত হয়ে থাকে দিবসটি। কিন্তু বেসিনের এই অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, বেসিনগুলো স্থাপনের পর তো এর দেখভালের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। তারাই ম্যানেজমেন্ট করবে। এ বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।