1. aknannu1964@gmail.com : AK Nannu : AK Nannu
  2. admin@asianbarta24.com : arifulweb :
  3. angelhome191@gmail.com : Mahbubul Mannan : Mahbubul Mannan
  4. info@asianbarta24.com : Dev Team : Dev Team
শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
রোজা মানবিক গুণাবলি জাগ্রত করে: লায়ন গনি মিয়া বাবুল গাইবান্ধায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবেনা: অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া আড়ং এর ২৭তম আউটলেটের উদ্বোধন পত্নীতলায় অর্থ আত্মসাতকারী প্রতারক চক্রের একজন আটক গাবতলীতে রবিন খানের উদ্যোগে ৭’শ অসহায় দুস্থ পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ রাজশাহীতে বিএনপির পথসভায় পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১০ আটক ৭ পলাশবাড়ীতে সম্মুখ যুদ্ধে লেপ্টে: রফিকসহ আত্মোৎসর্গ শহীদদের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত চোখের আলো নিয়ে বাড়ী ফিরেছেন দিনাজপুরের এক হাজার ৬৬ জন নারী-পুরুষ ঠাকুরগাঁওয়ে জয়নাল আবেদীন স্মরণসভা ও উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান

বিভক্ত তাবলীগ জামাত এবং বিশ্ব ইজতেমা

  • আপডেট করা হয়েছে : রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৩৫ বার দেখা হয়েছে

আমিনুল ইসলাম হিরো:
বিশ্বের মুসলিম ধর্মালম্বি মানুষের মাঝে বৃহত্তম ২য় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে দুই দলে বিভক্ত
হওয়া শীর্ষ নেতারা একক একটি ইজতেমার ব্যাপারে একমত না হতে পারায় আগামী জানুয়ারিতে আবারও দুটি আলাদা বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকার কাছে টঙ্গীতে।

ঢাকায় বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের নেতাদের নিয়ে এক বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন যে দু’পক্ষের দুই শীর্ষ নেতাকে একসঙ্গে ইজতেমা করার বিষয়ে একমত হওয়ার জন্য বলা হলেও তারা সেটা পারেননি। সে কারণেই পরে ওই নেতাদের প্রস্তাব দেয়া হয় যে তারাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন কারা আগে আর কারা পরে ইজতেমা করবেন।
কিন্তু সেই বিষয়েও শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষ একমত হতে পারেননি।

আমরা তাদের জানিয়েছি যে গতবার যেভাবে হয়েছে এবারও ঠিক সেভাবে ইজতেমা সুসম্পন্ন করতে এবং তারা সেটি মেনে নিয়েছেন,” মিস্টার খান সাংবাদিকদের জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৩-১৫ই জানুয়ারি মাওলানা জুবায়ের আহমদের নেতৃত্বাধীন অংশ, আর ২০-২২শে জানুয়ারি মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলামের অংশ ইজতেমার আয়োজন করবে।

ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্দালভীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ২০১৭ সালে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক তাবলীগ জামাতের নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশে দুই গ্রুপ আলাদা হয়ে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজন করেছেন এবং তাতে অংশ নিচ্ছেন।

তাবলীগ জামাতে দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বের মূল কারণ কী?

৩করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছর বিরতির পর এবার আবার বিশ্ব ইজতেমার অনুমতি দিচ্ছে সরকার।

ঢাকার কাছে টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা ১৯৬৭ সাল থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এবং এতে দেশের বাইরে থেকে অনেক মুসল্লী যোগ দিয়ে থাকেন।

বিশ্ব ইজতেমায় লক্ষ লক্ষ মানুষ যোগদান করেন এবং মুসলমানদের সবচেয়ে বড় জমায়েত হজের পর এটিকেই অন্যতম বড় সমাবেশ বলে মনে করা হয়।

দিল্লিতে দ্বন্দ্ব ও বিভক্ত বাংলাদেশের তাবলীগ জামাত

ভারতীয় উপমহাদেশে সুন্নী মুসলমানদের বৃহত্তম সংগঠন এই তাবলীগ জামাতের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে, যখন ঢাকায় তাদের মূল কেন্দ্র কাকরাইলে দুই দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়।

পরের বছর কাকরাইল মসজিদের দখল নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছিলো দু’পক্ষের মধ্যে।

তাবলীগের এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে আছেন তাবলীগ জামাতেরই কেন্দ্রীয় নেতা ভারতের মোহাম্মদ সাদ কান্দালভী।

মূলত মিস্টার কান্দালভীর কিছু বক্তব্য ভারতে তাবলীগ জামাতের একাংশকে দারুণভাবে ক্ষুব্ধ করে তোলে। বিশেষ করে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ তার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে।

মাওলানা সাদকে ঘিরে তাবলীগের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

নির্বাচন আর কান্দালভি বিতর্কে পেছালো ইজতেমা

দারুল উলুম দেওবন্দ-এর সাদ বিরোধী অবস্থান প্রকাশ্য হওয়ার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশেও। বিভক্ত হয়ে পড়েন বাংলাদেশের তাবলীগ জামাতের শীর্ষ নেতারা।

২০১৮ সালের জুলাই মাসে তাবলীগ জামাতের সাদ বিরোধী অংশকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন নেতা আহমদ শফী, যিনি মাওলানা শফী নামে পরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশে তখন থেকেই সাদ বিরোধী অংশটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাওলানা জুবায়ের আহমদ আর সাদপন্থীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলাম।

এক দলের নেতা হলেন জুবায়ের (মাওলানা জুবায়ের আহমদ), অন্য দলের নেতা হচ্ছেন ওয়াসিফুল সাহেব (মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলাম)। তারা দুজনই আগে একসঙ্গে তাবলীগ করতেন, এখন ওনারা দু’জন দুই প্রান্তে চলে গেছেন,” বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

সাদ কান্দালভীর কোন বক্তব্য নিয়ে বিভক্ত তাবলীগ?

বেশ কিছু সময় ধরেই মি. কান্দালভী তাবলীগ জামাতে কিছু সংস্কারের প্রয়োজনের কথা বলে আসছিলেন, যা নিয়ে ২০১৭ সালেই ভারতে তাবলীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিভক্তির সূত্রপাত হয়।

তার একটি বক্তব্য ছিল যে “ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয়”। অনেকেই মনে করেন যে এই বক্তব্যের মাধ্যমে মিলাদ বা ওয়াজ মাহফিলের মতো কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিনিময়ে অর্থ নেয়ার বিপক্ষে বলা হয়েছে।

সাদ কান্দালভী এই সময়ে আরও বলেছিলেন, “মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকদের মাদ্রাসার ভেতরে নামাজ না পড়ে মসজিদে এসে নামাজ পড়া উচিত, যাতে মানুষের সাথে যোগাযোগ বাড়ে।

এসব বক্তব্যে দারুল উলুম দেওবন্দ অনুসারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি করে এবং তাদের বক্তব্য যে মি. কান্দালভীর কথাবার্তা আহলে সুন্নাত ওয়া’ল জামাতের বিশ্বাস ও আকিদার বাইরে।

বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে । বিভক্তদের এক করা যাচ্ছে না কেন?

বিভক্ত তাবলীগ জামাতের উভয় পক্ষকে নিয়ে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এমনকি বিরোধ মেটানোর জন্য ইসলামী চিন্তাবিদদের নিয়ে সরকার একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করলেও তাতে কোন ফলাফল আসেনি।

তাবলীগ জামাতের অন্যতম নেতা জহীর ইবনে মুসলিম মনে করেন যে মোহাম্মদ সাদ কান্দালভী নিজ থেকে এর সমাধান না করলে তাবলীগ জামাতের বিভক্তির অবসান হবে না।

কারণ দারুল উলুম দেওবন্দ বলেছে মাওলানা সাদ কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়েছেন। এখন তাকেই এর সমাধান করতে হবে। তিনি সেটি করার পর দেওবন্দ থেকে আপত্তি তুলে নেয়া হলে সাদ কান্দালভীই তাবলীগ জামাতের নেতা হিসেবে ফিরে আসবেন, বলে সাংবাদিকদের জানান ।

দেওবন্দ থেকে ২০১৭ সালে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো, তাতে বলা হয়েছিলো যে তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী সাদ কান্দালভী কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং নবী-সাহাবীদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন। এ অবস্থান থেকে না ফিরলে তিনি সঠিক নন। ফলে তারা ‘ফেরকা’ – ইসলাম থেকে বিচ্যুত গোষ্ঠী হয়ে যেতে পারে।

মুফতি জহীর ইবনে মুসলিম মনে করেন, এই অবস্থায় দেওবন্দ থেকে নতুন নির্দেশনা না আসলে এবং এখনকার শুরা সদস্যদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত না এলে সাদ কান্দালভীকে ঘিরে বিভক্তির অবসানের কোন সুযোগই নেই।

তাবলীগ জামাতের আরেকজন নেতা ওমর ফারুক বলেছেন যে চলমান এই সংকটের সমাধান বাংলাদেশের আলেমদের নিয়ন্ত্রণ ও আয়ত্তের বাইরে।

এটা জাগতিক বিষয় হলে তার সমাধান হতো বা চেষ্টা করা যেতো। কিন্তু বিষয়টা ধর্ম ও বিশ্বাস নিয়ে। তাই এটা ঠিক নেতৃত্বের দ্বন্দ্বও নয়। ধর্মীয় সংকট ধর্মের আলোকেই সমাধান করতে হবে। তাবলীগের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসা-ভিত্তিক তাবলীগ জামাতের নেতারা ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করবেন।

আর সে কারণে দেওবন্দের পক্ষ থেকে সাদ কান্দালভীকে গ্রহণ না করা হলে বাংলাদেশেও তাবলীগ জামাতের একটি বড় অংশ তাকে গ্রহণ করবে না এবং তার অনুসারীদের সাথে এক যোগে কাজ করবে না।

তবে সাদ কান্দালভীর সমর্থকরা মনে করেন যে তাবলীগ জামাতের ৯০ শতাংশই ‘নিজামুদ্দিন মারকাজ’ বা সাদ কান্দালভীর অনুসারী হিসেবেই আছেন।

তাদের মতে, একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও সাদ কান্দালভীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আলাদা অবস্থান নিয়েছে।

তবে বিভক্ত দুটো গোষ্ঠী যতই তাদের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিক না কেন, নেতাদের এই বিরোধ এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বের তাবলীগ জামাতের অনুসারীদের মধ্যেই। ব্রিটেন, আমেরিকা কিংবা ইউরোপের দেশগুলোতে যারা তাবলীগ জামাতের নেতৃত্বে রয়েছেন, তাদের মধ্যেও এই বিভক্তি এখন স্পষ্ট বোঝা যায়।

বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন

এরকম আরও বার্তা
স্বত্ব © ২০১৫-২০২২ এশিয়ান বার্তা  

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft