শামীম মিয়া
মির্জাপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করেই চোখ উঠা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। চোখ উঠা নামে পরিচিত এই রোগে শিশুদের বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এতে উদ্বিগ্ন অনেক অভিভাবক সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। এ রোগ থেকে শুধু শিশু নয়,সব বয়সের মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সংক্রমিতরা বেশির ভাগই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে চোখ উঠা রোগের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ঔষধের দোকানে চোখের ড্রপের চাহিদা বেড়েছে। মির্জাপুর পৌর সদরের হক সুপার মার্কেটের ফার্মেসী মালিকরা জানান,গত কয়েক দিন ধরে ফার্মেসীতে প্রচুর চোখ উঠা রোগী ভিড় করছেন। আক্রান্তের অধিকাংশই ড্রপ নিতে আসছেন। জটিল কোনো রোগী দেখলে ও কোনো শিশু আক্রান্ত হলে তাদেরকে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন তারা।
উপজেলার বহুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আলীম সিকদার জানান,গত সপ্তাহে তার মেয়ের চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হয়। এরপর ২-৩ দিন পর তিনি নিজেও এ রোগে আক্রান্ত হন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান,গরমে,বর্ষায় ও ঋতু পরিবর্তনের সময় চোখ উঠা রোগের প্রকোপ বাড়ে। কনজাঙ্কটিভাইটিসের লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া,চোখে ব্যথা বা অস্বস্তি প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়।পরে অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে।এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে।চোখের নিচের অংশ ফুলে ও লাল হয়ে যায়।আলোয় চোখে অস্বস্তি বাড়ে। প্রতিদিনই চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন।
উপজেলা সদর ছাড়াও গ্রাম এলাকায় বাড়ছে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিন গড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক চোখ রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর আগে এই সংখ্যা ছিলো দৈনিক ৪-৫ জন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন,চোখ উঠা একটি ভাইরাসজনিত রোগ। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে তাই করোনায় যে রকম স্বাস্থ্যবিধি ঠিক অনেকটাই ওই রকমই মানতে হয়। তবে ড্রপ ব্যবহারের আগে এর মান ও মেয়াদ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও সবাইকে সতর্কতা থাকার আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।