বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার কাহালুর জামগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে ভূয়া কাগজ তৈরী করে টেন্ডার ছাড়াই রাস্তার প্রায় আড়াই হাজার গাছ বিক্রয় করে কোটি টাকা আতœসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাহালু উপজেলার জামগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তায় প্রায় ১২ বছর পূর্বে হিলফুল ফুজুল সমাজ কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সুবিধাভোগী সংস্থার উদ্যোগে গাছের চারা লাগানো হয়। গাছগুলো বিক্রয় করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওযার উদ্দ্যেশে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগসাজস করে ভূয়া কাগজ-পত্র তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের অনুমতি না নিয়ে জামগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীগ সভাপতি প্রভাষক মনোয়ার হোসেন খোকন টেন্ডার ছাড়াই বিক্রয় করে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জামগ্রাম ইউনিয়নের দ্বারাই থেকে আরাইল, আখরাইল থেকে মাগুরা রাস্তার দু’পাশ থেকে প্রায় ৩শ’ সদ্য কর্তনকৃত ইউক্যালিপটাস গাছের গোড়ালী। এছাড়া কৃষ্ণপুর- ভালশুন,পানাই-বান্ধাই খাড়াসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তার দু’পাশ থেকে গত ৩তিন দিনে কাটা হয়েছে প্রায় ২ হাজার থেকে ২২শ’গাছ, যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। এলাকবাসী সূত্রে জানাগেছে, কর্তৃপক্ষের নিষেধ উপেক্ষা করে ভুয়া অনুমতি পত্র দেখিয়ে রাতের আঁধারে গাছগুলো অন্যত্র পাচার করা হয়েছে। রাস্তার গাছ কেটে বিক্রয় করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবরে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি ধামা চামা দিতে ঐ চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন খোকনের সাথে কথা বলা হলে তিনি ১৫শ’ গাছ ১৯ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সুবিধা ভোগী হিলফুল ফুজুল সমাজ কল্যাণ সমিতিসহ সুবিধা ভোগী সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদের সিদ্ধান্তে এবং কৃর্তপক্ষের নিকট আবেদন করেই গাছ গুলো বিক্রয় করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। গাছ বিক্রয় বিষয়ে পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন , টেন্ডার করা হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে প্রকাশ্যে নিলাম ডাক করা হয়েছে। তার পরেও গত ২৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাছ কর্তন করতে নিষেধ করলে, বন্ধ করে দেই এবং কাটা ১০৮ টি গাছ ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় নিয়েছি। তবে পরিষদের জিম্মায় ১০৮ টি গাছ রাখার কথা বলা হলেও সেখানে আনুমানিক ৮-১০ টি গাছের গুড়ি দেখাগেছে।
এ ব্যাপারে কাহালু উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা জানান, লোকমূখে ও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে গাছ কাটর সংবাদ পেয়ে তৎক্ষনাৎ ঐ ইউপি চেয়ারম্যানকে গাছ কাটা বন্ধের এবং কাটা গাছ গুলো তার জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিয়েছি। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাছ কর্তন বা বিক্রয় করতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছের মালিক ইউনিয়ন পরিষদ বা স্থানীয় সরকার বিভাগ হলেও বন-বিভাগসহ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বা বিক্রয় করার এখতিয়ার পরিষদের চেয়ারম্যানের একার নেই। আমি বা বন বিভাগ জামগ্রাম ইউনিয়নের রাস্তার গাছ কর্তনে অনুমতি দেইনি।