মঈন উদ্দিনঃ রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার পোস্টাল একাডেমির সামনে ডাকাতির ঘটনায় ৬ ঘন্টার মধ্যে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া ১৬ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি অ্যাম্বুলেন্স জব্দ করা হয়েছে।
রোববার আরএমপি সদরদপ্তর কনফারেন্স রুমে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো: মজিদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার পূর্ব মোল্লাপাড়ার মো: রাজ্জাকের ছেলে মো: আশিক ইসলাম (২৪), মো: আজাদ আলীর ছেলে মো: হৃদয় (২৪), রাজপাড়া থানার আলীগঞ্জ মধ্যপাড়ার মো: আসলাম আলীর ছেলে মো: আব্দুর রহমান (২১), আসলামের ছেলে মো: আব্দুর রহিম (২০), ডিঙ্গাডোবা ঘোষ মাহালের মো: লোকমানের ছেলে মো: রিকো ইসলাম (২১) ও চন্ডীপুর সুফিয়ানের মোড়ের মৃত এবাদুলের ছেলে মো: ইয়ামিন (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহী মহানগরীর পবা থানার একলাছ মোল্লা-সহ ৮৫ জন পান ব্যবসায়ী একটি সমিতি গঠন করে রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর থানার দাওকান্দি বাজারে পানের ব্যবসা করত। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী’র বিভিন্ন অঞ্চল হতে পান ক্রয় করে ঢাকার শ্যাম বাজারে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে থাকে।
গত শনিবার ভোর সোয়া ৫ টায় মো: রায়হান আহম্মেদ (২৬), মো: শহিদুল ইসলাম (৩০) ও মো: আমিনুল ইসলাম (২৭) ঢাকায় পান বিক্রির ৩৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা নিয়ে শিরোইল বাস টার্মিনালে পৌঁছে। সেখান তারা একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে দাওকান্দি বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। একসময় তারা লক্ষ করে, তাদের সিএনজি অটোরিকশাকে একটি নীল রংয়ের অ্যাম্বুলেন্স অনুসরণ করছে। ভোর সাড়ে ৫ টায় নগরীর শাহমখদুম থানার পোস্টাল একাডেমির সামনে পৌঁছালে পিছন থাকা সেই অ্যাম্বুলেন্সটি হঠাৎ সামনে এসে তাদের গতিরোধ করে। সিএনজি থামার সাথে সাথেই অ্যাম্বুলেন্স হতে ৬-৭ জন ডাকাত বের হয়ে চায়নিজ কুড়াল, হাসুয়া, চাকু, ছোরা ও লোহার রড নিয়ে তাদের ঘিরে ধরে।
এসময় রায়হান পালানোর চেষ্টা করে। ডাকাতরা তাকে ধরে মারধর করে তার কাছে থাকা ১৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা-সহ অন্যদের কাছে থাকা মোট ৩৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা ডাকাতি করে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আম চত্বরের দিকে পালিয়ে যায়।
একলাছ মোল্লার এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আরএমপি’র সম্মানিত পুলিশ কমিশনার মো: আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনা পুলিশ আসামিদের নাম ঠিকানা ও অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেন।
পরবর্তীতে শাহমখদুম থানা পুলিশ আরএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত এ্যাম্বুলেন্স-সহ আসামিদের সনাক্ত করে। এরপর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেফতার করে। এসময় আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া ১৬ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়। সেই সাথে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সটি জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।