কায়সার হামিদ মানিক, স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার।
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট। এ সময় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপরে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে ই-ভাউচার আউটলেট, রোহিঙ্গা মহিলা গ্রুপের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি। পরে ব্যাচেলেট বৃক্ষরোপণের বিভিন্ন প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন করেন।
ক্যাম্প-২০ এ আইওএম পরিচালিত সাইট ডেভেলপমেন্ট হাবের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হলে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানেই হবে। এ ব্যাপারে মিয়ানমারসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
কয়েকটি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নারী, যুব প্রতিনিধি ও ধর্মীয় প্রতিনিধি ইমামদের সঙ্গে আলাদাভাবে মতবিনিময় করেন। এ সময় জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকারসহ মানবাধিকারের প্রতি গুরুত্ব দেবে বলে জানান তিনি।
মিশেল ব্যাচেলেট সেখান থেকে ক্যাম্পের বিভিন্ন লার্নিং সেন্টার পরিদর্শনে যান। সেখানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানতে চান, ক্যাম্পে তারা কেমন আছেন। প্রতি উত্তরে রোহিঙ্গারা বলেন আমরা ভালো আছি। এছাড়াও এত বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। ক্যাম্পে থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, শিক্ষা, সেবা পাচ্ছেন বলে জানান রোহিঙ্গারা।
ক্যাম্প ৪ এর রোহিঙ্গা নেতা জমির বলেন, নিজ দেশ মিয়ানমারে গিয়ে সুন্দরভাবে নাগরিকত্ব নিয়ে ফিরতে চাই।
এদিন দুপুরে কক্সবাজার শহরে ফিরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ সরকারের শরণার্থী ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। তবে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে আরআরআরসি’র কর্মকর্তা, ক্যাম্প ইনচার্জ ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, চারদিনের সফরে রবিবার ঢাকায় এসে পৌঁছান ব্যাচেলেট, সেদিন রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সোমবার জাতীয় শোক দিবসে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ব্যাচেলেট। মঙ্গলবার কক্সবাজার সফর শেষে পরদিন বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দেখা করার কথা রয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার জুলুম নিপীড়ন গণহত্যার কারণে প্রায় ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।